অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত দিন লাগে?

অনলাইনে কিংবা নির্বাচন অফিসে, যেখানেই ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের জন্য আবেদন করে থাকেন না কেনো, প্রথমেই উক্ত আবেদনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ হওয়ার জন্য ঢাকার NID Wing এর হেড অফিসে পাঠানো হয়। সেখান থেকেই প্রসেসিং এর মাধ্যমে একেকটি আবেদন একেক স্থানে ও সংশোধনের সময়ে ভাগ হয়ে যায়। এবার তবে আসুন জেনে নেয়া যাক কোন ধরণের সংশোধনী আবেদনের জন্য কত সময় লাগে। 

অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত দিন লাগে? 

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত দিন লাগে তা নির্ভর করে সংশোধনের ধরন এবং ক্যাটাগরির উপর। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের কাজকে চারটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করেছে: ক, খ, গ, এবং ঘ। প্রতিটি ক্যাটাগরির জন্য সময়সীমা এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ভিন্ন। নিচে এই ক্যাটাগরিগুলোর বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হলো:

ক ক্যাটাগরি: এই ক্যাটাগরির সংশোধনগুলো তুলনামূলকভাবে সহজ এবং দ্রুত সম্পন্ন হয়। এতে নামের বানান সংশোধন, জন্ম তারিখের সামান্য পরিবর্তন (৩ বছর পর্যন্ত), ঠিকানা পরিবর্তন, লিঙ্গ পরিবর্তন, বৈবাহিক অবস্থা সংশোধন, রক্তের গ্রুপ ও মোবাইল নম্বর ইত্যাদি সংশোধন অন্তর্ভুক্ত। এই ধরনের সংশোধনের জন্য সাধারণত ৭ কার্যদিবস সময় লাগে এবং উপজেলা নির্বাচন অফিসার এর দায়িত্ব পালন করেন।

খ ক্যাটাগরি: এই ক্যাটাগরিতে মাঝারি ধরনের সংশোধন গুলো পড়ে, যেমন স্বামী বা স্ত্রীর নাম সংযোজন/বিয়োজন, জন্ম তারিখ সংশোধন (৫ বছর পর্যন্ত), শিক্ষাগত যোগ্যতা পরিবর্তন, ছবি বা স্বাক্ষর আপডেট ও ধর্ম পরিবর্তন এর মত বিষয় গুলো ইত্যাদি। এই ক্যাটাগরির আবেদন সম্পন্ন করতে ১৫ কার্যদিবস সময় লাগে এবং জেলা নির্বাচন অফিসার এর তত্ত্বাবধানে কাজটি সম্পন্ন হয়।

গ ক্যাটাগরি: এই ক্যাটাগরির সংশোধন গুলো তুলনামূলকভাবে জটিল, যেমন সম্পূর্ণ নাম পরিবর্তন (পাবলিক পরীক্ষার সনদের ভিত্তিতে) বা জন্ম তারিখ সংশোধন (৫ বছরের বেশি, তবে চাকরির বয়সসীমা বা অন্যান্য নির্দিষ্ট ক্ষেত্র ব্যতীত)। এই ধরনের সংশোধনের জন্য ৩০ কার্যদিবস সময় লাগতে পারে এবং আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসার এর দায়িত্বে থাকেন।

ঘ ক্যাটাগরি: এটি সবচেয়ে জটিল ধরনের সংশোধন, যেমন সম্পূর্ণ নাম পরিবর্তন (পাবলিক পরীক্ষার সনদ ছাড়া অন্য প্রমাণের ভিত্তিতে) বা জন্ম তারিখ সংশোধন (সকল ক্ষেত্রে, যেমন চাকরির বয়সসীমা বা মুক্তিযোদ্ধা সুবিধার জন্য)। এই ক্যাটাগরির সংশোধন সম্পন্ন করতে ৪৫ কার্যদিবস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে এবং এনআইডি উইংয়ের মহাপরিচালক এর তত্ত্বাবধানে কাজটি সম্পন্ন হয়।

উল্লেখ্য, এইখানে উল্লেখ্যিত সময়সীমা কার্যদিবসের হিসাবে নির্ধারিত, এবং সরকারি ছুটির দিন বা বিশেষ পরিস্থিতিতে (যেমন নির্বাচনকালীন ব্যস্ততা) এই সময় কিছুটা বেশি বা কম হতে পারে।

আইডি কার্ড সংশোধন সংক্রান্ত FAQ

১) ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত দিন লাগে?

সংশোধনের ক্যাটাগরির ওপর নির্ভর করে ৭ থেকে ৪৫ কার্যদিবস সময় লাগতে পারে। ক ক্যাটাগরির জন্য ৭ দিন, খ ক্যাটাগরির জন্য ১৫ দিন, গ ক্যাটাগরির জন্য ৩০ দিন এবং ঘ ক্যাটাগরির জন্য ৪৫ দিন।

২) জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের ক্যাটাগরি কয়টি?

মোট চারটি ক্যাটাগরি: ক, খ, গ, এবং ঘ।

৩) সংশোধনের জন্য ফি কত?

মৌলিক সংশোধনের জন্য ২৩০ টাকা ও অন্যান্য বিষয় সংশোধনের জন্য ১১৫ টাকা, এবং উভয় ধরনের সংশোধনের জন্য ৩৪৫ টাকা ফি প্রযোজ্য।

৪) ভুল প্রমাণপত্র জমা দিলে কী হবে?

ভুল বা অগ্রহণযোগ্য প্রমাণপত্র জমা দিলে আবেদন বাতিল হতে পারে। তাই সঠিক এবং বৈধ দলিল জমা দেওয়া উচিত। 

চূড়ান্ত মন্তব্য 

আশা করি উক্ত আর্টিকেলের মাধ্যমে অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত দিন লাগে তা জানতে পারছেন। পরবর্তীতে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে চাইলে সময়ের হিসাবটি মনে রেখে ডেলিভারি ধরণ (স্ট্যান্ডার্ড নাকি ইমার্জেন্সি) সেট করবেন। 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top